Header Ads

Huawei ব্যান প্রসঙ্গ | Google কেন ব্যান করল? - নেপথ্যের কাহিনী

Huawei ব্যান প্রসঙ্গ

Why Google suspended their Service to Huawei / Huaei the china mobile brand. Keno block korlo google keno ban korlo huaei ke. youtube map and gmail is blocked banned and suspended in huawei mobile phone

কেন এই ব্যান?


স্মার্টফোন ব্র‍্যান্ড গুলো বিভিন্ন সময়ই টুকটাক ফ্রড বা চিটিং করে থাকে। যেমন অতীতে ওয়ানপ্লাসকে একাধিকবার বেঞ্চমার্ক স্কোর চিটিং বা হুওয়ায়ে কে ডিএসএলআরের ছবিকে তাদের ফোনের ছবি বলে চালিয়ে দিতে দেখা গেছে। কিন্তু এসব টুকটাক চিটিং কে শেষমেশ তেমন একটা পাত্তা দেয়া হয়না। কিন্তু চিটিং টা যখন প্রাইভেসি রিলেটেড হয়, তখন সেটা খুবই সিরিয়াস ব্যাপার হয়ে যায়। হুয়াওয়েকে ব্যান করার পেছনে আমেরিকার দাবী হুয়াওয়ের স্মার্টফোন গুলিতে একপ্রকার ব্যাকডোর ভাইরাস বা স্পাইওয়্যার রানিং থাকে যা ইউজারদের পার্সোনাল ডাটা চুরি করে তাদের সার্ভারে পাঠায় এবং সেটার প্রমাণ ও নাকি আমেরিকার কাছে আছে। এখন FBI বা CIA প্রমাণ না রেখে এত বড় দাবী করবে বলে মনে হয়না, তবুও তর্কের খাতিরে আমরা যদি ধরেও নেই যে তাদের দাবী মিথ্যা, কিন্তু তবুও হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে ডাটা চুরি সহ বিভিন্ন অভিযোগ এই প্রথম না।

Why Google suspended their Service to Huawei / Huaei the china mobile brand. Keno block korlo google keno ban korlo huaei ke. youtube map and gmail is blocked banned and suspended in huawei mobile phone
সেই ২০০৩ থেকেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তথ্য চুরির। হুয়াওয়ে মূলত চীনা সরকারের প্রতক্ষ্য মদদে চালিত কোম্পানি। তাদের কে অনেকটা চীনের রাষ্ট্রীয় ব্র‍্যান্ড ও বলা চলে। তাদের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ তারা তাদের স্মার্টফোনে ব্যাকডোর এপ্লিকেশনের মাধ্যমে ইউজারদের ডাটা সংগ্রহ করে এবং তা চীনা সরকারকে সরবরাহ করে। এসব কারণে বিভিন্ন সময়ে তারা আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড, জার্মানি, কানাডা, ইংল্যান্ড সহ বিভিন্ন দেশে প্রায় নিষিদ্ধ বা রেস্ট্রিকটেড ছিলো।
এমনকি এই জানুয়ারী মাসেও হুয়াওয়ের এক কর্মকর্তা পোল্যান্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন 'স্পাইয়িং' এর অপরাধে।
১৮ তে তাদের CFO গ্রেফতার হয়েছিলো, একই বছরের সেপ্টেম্বরে তাদের বেঞ্চমার্ক স্কোর চুরি ধরা পরেছিলো। সেই বছরের নভেম্বরেই নিউজিল্যান্ড রিস্ক খুজে পেয়ে হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধ করে। এবং সাম্প্রতিক সময়ে তাদের Honor 7x ফোনেও 'imonitor' নামের প্রি-ইনস্টলড স্পাইওয়্যারের এক্টিভিটি ধরা পরে।

ব্যানের ফল কি হবে?


ইতিমধ্যেই গুগলের সাথে ইন্টেল, কোয়ালকম সহ আরো অনেক চিপ মেকার কোম্পানিই একাত্মতা প্রকাশ করেছে। মানে তারাও এই ব্যান সমর্থন করে। ফলে ভবিষ্যতে তাদের ফোনে স্ন্যাপড্রাগন আর ল্যাপটপে ইন্টেল প্রসেসর ও হয়ত আর দেখা যাবেনা।

ব্যানের ফলে ভবিষ্যৎ হুয়াওয়ে ফোন গুলিতে আর প্লেস্টোর বা গুগল অ্যাপস গুলি থাকবেনা। এমনকি এন্ড্রয়েড থাকবে কিনা সেই সন্দেহ ও আছে কিছুটা! কারণ এন্ড্র‍য়েডের মেজর ডেভেলপমেন্ট গুলো গুগলেরই করা। যদিও এন্ড্র‍য়েড ওপেন সোর্স লিনাক্স ভিত্তিক হওয়ায় সেই আশংকা খুব কম। একান্তই গুগল আদালতে গেলে বা গুগলকে আদালতে যেতে বাধ্য করালে ভিন্ন হিসাব।

গুগলের পার্টনারশিপ না থাকায় বর্তমানে ইউজারদের হাতে থাকা রানিং হুয়াওয়ের ফোন গুলিতেও আর এন্ড্রয়েড আপডেট আসার সম্ভাবনা খুবই কম। এর মানে, আপনার হুয়াওয়ে ফোন এখন Android P রানিং হলে সেটা আজীবন হয়ত P তেই থাকবে, কখনো আর Q এর আপডেট আসার সম্ভাবনা হয়ত নেই।
সবচেয়ে বড় ঝামেলা হবে, গুগল হুয়াওয়ে কে আর কোন 'সিকিউরিটি প্যাচ' প্রোভাইড করবেনা। যেটা হুয়াওয়ে ফোন গুলিকে ভবিষ্যতে ভালনারেবল করে তুলবে।

Why Google suspended their Service to Huawei / Huaei the china mobile brand. কেন বন্ধ করল গুগল হুয়াই কে Keno block korlo google keno ban korlo huaei ke. বানিজ্য যুদ্ধ youtube map and gmail is blocked banned and suspended in huawei mobile phone. গুগল ব্যান করে দিল হুয়াই কে, বন্ধ করে দিল গুগল


হুয়াওয়ে কি করবে?


অনেকেই বলতেসে হুয়াওয়ের গুগলকে লাগবেনা, তারা নিজেরাই OS বের করে নিবে! কথা টা হাস্যকর। হুয়াওয়ে অবশ্যই নিজস্ব OS বের করার সামর্থ্য রাখে কিন্তু শুধু OS হলেই হয়না। স্যামসাং ও নিজেদের OS বের করসিলো, শেষমেশ অ্যান্ডয়েডেই সীমাবদ্ধ ছিলো। অতীতে মাইক্রোসফটের মত হিউজ কোম্পানির উইন্ডোজ মোবাইল ওএসকে শুধুমাত্র অ্যাপসের অভাবে বন্ধ হয়ে যেতে দেখা গেসে। একটা নতুন OS ধুম করে বের হয়ে ধাম করেই সব জয় করে ফেলেনা। আজকের এন্ড্রয়েড কেও এই পর্যন্ত আসতে দশ বছর সময় লাগসে। কেউ যদি ভাবে, হুয়াওয়ের নতুন ওএস এসেই এন্ড্রয়েডের সাথে পাল্লা দিবে তাহলে সেটা হবে বোকামী। এতটা পোলিশড, রিলায়েবল আর হিউজ পরিমাণ অ্যাপসের ভান্ডার সমৃদ্ধ অ্যান্ডয়েড রেখে চীনের বাইরে কেউ হুয়াওয়ের ওএস বেছে নিবে বলে মনে হয়না। আর তারা নিজস্ব ওএস বের করলেও তাদের সেই সফটওয়্যার কতটুকু পোলিশড হবে সেটা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়, যেখানে চীনের সবচেয়ে বড় কোম্পানি হয়েও তাদের ফোনের EMUI চীনেরই অন্যান্য অনেক ফোনের UI এর চেয়ে এখনো বেশ পিছিয়ে। চাইনীজ হার্ডওয়্যার ভালো খারাপ যেমন ই হোক, চাইনীজ সফটওয়্যার যে কেমন আর কতটা ইরিটেটিং হতে পারে সেটা চাইনীজদের Uc / Baidu ইউজ করতে গেলেই বোঝা যায়।

হুয়াওয়ের কতটা ক্ষতি হবে?


ব্যানের ফলে গুগল নিজেও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিন্তু হুয়াওয়ের ক্ষতি হবে হিউজ। যদি ফোনে প্লেস্টোর ই না থাকে, তাহলে সেই ফোন চীন বা ইন্ডিয়ায়ও হয়ত মোটামুটি বিক্রি হবে কিন্তু ওয়েস্টার্ন কান্ট্রিগুলোতে বিক্রি হওয়ার চান্স খুবই কম। পাশাপাশি ওএস আপডেট, সিকিউরিটি প্যাচ, গুগল অ্যাপস গুলোর অভাবে অনেক পিছিয়ে পরবে ভবিষ্যত হুয়াওয়ে ফোন গুলো। যা তাদের মার্কেট শেয়ার শুধু কমাবেই। শাওমির ও প্লেস্টোর প্রি-ইনস্টলড ছাড়া অনেক ফোন আছে কিন্তু সেই হিসেব আলাদা। শাওমির নন-গ্লোবাল ফোন গুলিও বুটলোডার আনলকের মাধ্যমে গ্লোবাল / কাস্টম রমের সুবিধা পেতে পারে কিন্তু হুয়াওয়ে বর্তমানে তাদের ফোনে বুটলোডার আনলক করারও অপশন দিচ্ছেনা। ফলে তাদের ভবিষ্যৎ ফোন গুলিতে কাস্টম রম পর্যন্ত ব্যাবহার করা যাবেনা, যদিনা তারা আবার বুটলোডার আনলকের সুযোগ সামনে না দেয়।
Why Google suspended their Service to Huawei / Huaei the china mobile brand. Keno block korlo google keno ban korlo huaei ke. youtube map and gmail is blocked banned and suspended in huawei mobile phone

প্লেস্টোর না থাকলে পশ্চিমা দেশে কিংবা আমাদের উপমহাদেশেও বিক্রি অনেকাংশে কমবে বললাম, কারণ যেখানে MiUi তে এক ক্লিকে অতি সহজে অ্যাড অফ করার অপশন থাকার পরেও মানুষ MiUi এর অ্যাড নিয়ে পরে থাকে, সেখানে প্লেস্টোর বা গুগল অ্যাপস না থাকাটা অনেকের কাছেই আরো অনেক বড় ফ্যাক্ট হবে।

একইসাথে এমন ও শোনা যাচ্ছে যে, ফোন কম্পোনেন্ট সাপ্লাইয়ার রাও হুয়াওয়ে কে পার্টস সরবরাহ বন্ধ করতে যাচ্ছে। ওয়াশিংটন সাপ্লাইয়ার দের কে ব্ল্যাকলিস্টেড কোম্পানির কাছে পার্টস সরবরাহে কড়া হুশিয়ারি জানিয়েছে। ফলে হয়ত স্যামসাং এর মত কোম্পানির ডিসপ্লে বা সনির মত কোম্পানির ক্যামেরা সেন্সর থেকে বঞ্চিত হবে হুয়াওয়ে।

ব্যান টা কি পলিটিকাল?


ব্যান টা একই সাথে রিজনেবল, একই সাথে পলিটিকাল। এখানে ট্রেড ওয়্যারের ও ব্যাপার আছে। আমেরিকা চাইবেনা ভবিষ্যতে তাদের অ্যাপল কোন হুমকিতে পরুক। একই সাথে তারা এটাও চাইবেনা, তাদের প্রাইভেট ডাটা চাইনিজ গভর্নমেন্টের কাছে চলে যাক। নিজেদের প্রাইভেসির অযুহাতে তারা এটা করতেই পারে। বরং এর শুরুটা করসেই চীন। অনেক আগে থেকেই তারা প্রাইভেসির অযুহাতে নিজেদের দেশে আমেরিকান গুগল বন্ধ করে রাখসে। জিনিস টা অনেকটা টিট ফর ট্যাটের মত হয়ে গেসে।

অন্যান্য চীনা ব্র‍্যান্ড ও ব্যান খাবে?


সম্ভাবনা কম কারণ Huawei আর ZTE ব্যতীত ওয়ানপ্লাস, শাওমি, অপ্পো বা অন্য কোন ব্র‍্যান্ডের বিরুদ্ধে এমন তথ্য চুরির গুরুতর অভিযোগ নেই। আবার একই সাথে তারা কেউই চীনা সরকারের প্রতক্ষ মদদে চলেনা, যেটা হুয়াওয়ে চলে। তাই অন্যান্য ব্র‍্যান্ডের ব্যানের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

এটা ঠিক যে হুয়াওয়ের এই ব্যানের জন্য দায়ী তারা নিজেরাই, কিন্তু কখনোই একটা ব্র‍্যান্ডের মোবাইল ডিভিশনকে প্রায় পুরোপুরি শেষ করে দেয়ার মত স্টেপ কে পুরোপুরি সমর্থন করা যায়না। নির্দোষ হলে হুয়াওয়ের উচিত হবে ল-স্যুট করা।
Powered by Blogger.